Playlist Audiobooks
Description
শারহু মাসাইলিল জাহিলিয়্যাহ
লেখকঃ শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান
প্লেলিস্টঃ https://www.youtube.com/playlist?list=PL6AAfPzsBJ6sm8NpEBfEt-JBgOWXCS3CR
আওলিয়া ও নেককারদের নিকট দু‘আ করা
জাহেলী যুগে আরবের লোকেরা আল্লাহর নিকট প্রার্থনা এবং ইবাদত করার সময় নেককার লোকদের শরীক করতো। এর মাধ্যমে তারা আল্লাহর নিকট তাদের সুপারিশ (শাফা‘আত) কামনা করতো। তারা ধারণা করতো যে, আল্লাহ তা‘আলা এমনটি পছন্দ করেন এবং নেককার লোকেরাও তা পছন্দ করে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(وَيَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لا يَضُرُّهُمْ وَلا يَنْفَعُهُمْ وَيَقُولُونَ هَؤُلاءِ شُفَعَاؤُنَا عِنْدَ اللَّهِ) [يونس: 18]
আর তারা আল্লাহ ব্যতীত এমন কিছুর ইবাদত করছে, যা তাদের ক্ষতি করতে পারে না এবং উপকারও করতে পারে না। আর তারা বলে, এরা আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী (সূরা ইউনুছ ১০:১৮)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
(وَالَّذِينَ اتَّخَذُوا مِنْ دُونِهِ أَوْلِيَاءَ مَا نَعْبُدُهُمْ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَا إِلَى اللَّهِ زُلْفَى) [الزمر: 3]
আর যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যদেরকে অভিভাবক হিসাবে গ্রহণ করে তারা বলে, ‘আমরা কেবল এজন্যই তাদের ‘ইবাদত করি যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেবে’ (সূরা আয যুমার ৩৯:৩)।
এটিই ছিল সব চেয়ে বড় বিষয়, যে ব্যাপারে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফিরদের বিরোধিতা করেছেন। তিনি একনিষ্ঠতা (ইখলাস) বর্ণনা করলেন এবং লোকদের জানিয়ে দিলেন যে, এটাই হচ্ছে আল্লাহর দীন, যে দীন দিয়ে তিনি সকল রসূলকে পাঠিয়েছেন এবং তিনি একনিষ্ঠ আমল ছাড়া অন্য কোন আমল গ্রহণ করেন না। তিনি আরো বললেন যে, যারা তাদের প্রবৃত্তি অনুযায়ী আমল করবে, আল্লাহ তাদের উপর জান্নাতকে হারাম করে দিবেন এবং তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম।
এ বিষয়টার কারণেই মানব জাতি ‘মুসলিম’ ও ‘কাফির’ দু’ভাগে বিভক্ত হয়েছে। এর কারণেই শত্রুতা সৃষ্টি হয়েছে এবং জিহাদ বিধিবদ্ধ হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ) [الأنفال: 39]
আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর যতক্ষণ না ফিতনার অবসান হয় এবং দীন পূর্ণরূপে আল্লাহর জন্য হয়ে যায় (সূরা আল আনফাল ৮:৩৯)।
........................................................
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْأِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
আর আমি জিন ও মানুষকে কেবল এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে তারা আমার ‘ইবাদত করবে (সূরা আয যারিয়াত ৫১:৫৬)।
‘ইবাদত একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার অধিকার। তার সাথে অন্য কাউকে অংশীদার স্থাপন করে তার ইবাদত করা বৈধ নয়, সে যেই হোক না কেন। জাহিলরা এ নির্দেশটি উল্টিয়ে দেয়। তারা আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত ছেড়ে দেয় অথচ এজন্যই তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তারা আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে মূর্তি, গাছ, পাথর, ফেরেশতা, জিন, আওলীয়া ও নেককার লোকদের ইবাদত করে। এভাবে তারা আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া অন্যের জন্য ইবাদত করে।
জাহিলদের মধ্যে কেউ কেউ আদৌ আল্লাহর ইবাদত করে না; আর তারা হচ্ছে, কাফির ও বস্তুবাদী নাস্তিক। আবার কেউ কেউ আল্লাহ্র ইবাদত করে, তবে তার সাথে অন্যের ইবাদতও করে। মূলতঃ তাদের বিধানও কাফির-নাস্তিকদের মতই। যারা আল্লাহর সাথে অন্যের ইবাদত করে, তারা ঐ লোকদের মত, যারা আদৌ আল্লাহর ইবাদত করে না। কেননা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের ইবাদত বাতিল। আর আল্লাহ তা‘আলা তার সাথে অংশীদারিত্ব পছন্দ করেন না। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, আমল শরী‘আত সম্মত হওয়া আবশ্যক। আল্লাহ তা‘আলা বিদ‘আতী আমল কবুল করেন না, অনুরূপভাবে তিনি শিরকযুক্ত আমলও গ্রহণ করেন না। সেজন্য, সবচেয়ে মারাত্মক ও ভয়াবহ জাহিলিয়্যাত হচ্ছে, আল্লাহর সাথে শরীক করা এবং বিদ‘ধাতী কাজ করা।
শাইখ রহিমাহুল্লাহ এ বিষয় দিয়ে তার আলোচনা শুরু করেছেন। কেননা জাহিলী বিষয়সমূহের মধ্যে তা সবচেয়ে মারাত্মক। এজন্য রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়কে অস্বীকার করা এবং তা মানুষকে ছেড়ে দেয়ার আহবান জানাতেন। অন্যান্য নাবী-রসূলগণের মত রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতের নির্দেশ দিতেন। আর আল্লাহ ব্যতীত অন্যের ইবাদত ছেড়ে দিতে বলতেন। এটা ছিল রসূলগণের দাওয়াতের সূচনা। কেননা তাওহীদ সকল আমলের মূল ভিত্তি। এটা বিনষ্ট হলে আমল মূল্যহীন বলে গণ্য হয়। তাওহীদ ব্যতীত ছ্বলাত, সিয়াম, হাজ্জ, যাকাত ও অন্যান্য সকল প্রকার ইবাদত মূল্যহীন। যেহেতু মূলভিত্তি তথা তাওহীদ বিনষ্ট হয়েছে, তাই কোন আমলই মূল্যায়ন যোগ্য নয়। শিরকের কারণে আমল বিনষ্ট ও বাতিল বলে গণ্য হয়।
জাহিলীযুগে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতের সাথে বিভিন্ন বস্তুর ইবাদত করা হতো। যেমন- আওলীয়া ও নেক লোকদের ইবাদত করা: নূহ আলাইহিস সালাম এর জাতি সৎ লোকদের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করে- যেমন-ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগুস ও নসর আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত ব্যতীত তারা এসব লোকদের কবর পূজা করতো। তারা মনে করতো এসকল ব্যক্তি সৎ, তারা আমাদেরকে আল্লাহ তা‘আলার নিকটবর্তী করে দিবে এবং আল্লাহর নিকট সুপারিশ করবে। তারা এর উপর ভিত্তি করে আওলীয়া, নেকলোক ও ফিরিশতাদের ইবাদত করতো। তারা বলে: তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দিবে এ কারণে তাদের ইবাদত করি। তাদের কথা: তারাই আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য সুপারিশ করবে।
আস সালামু আলাইকুম,
আলহামদুলিল্লাহ্, এই চ্যানেলটিতে আমি বিভিন্ন ইসলামিক বইয়ের অডিও লেকচার তৈরি করে আপলোড করাবো ইনশাআল্লাহ। চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন(Subscribe us: https://www.youtube.com/c/asliabir ) এবং শেয়ার করে অন্যদের জানার ব্যবস্থা করে দিন। সাথে বেল বাটনটিও চেপে রাখতে পারেন সকল নতুন ভিডিও এর নোটিফিকেশন জানার জন্যে।
ফেসবুকে আমাদের সাথে যুক্ত থাকুনঃ
পেইজঃ https://www.facebook.com/iAudioBooks/
গ্রুপঃ https://www.facebook.com/groups/iAudioBooks/
আমাদের ইসলামিক বই গিফট করতে আমাদের পেইজে মেসেজ করুন। জাযাকাল্লাহ খায়ের।